Amader Kantho- Bangla Online News Portal and Bangladeshi online news source for Game, Binodon, politics, national, international, lifestyle, sports, and many more factors.

ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Facebook Facebook Facebook Facebook

ই-কমার্সে আটকে থাকা টাকা জানুয়ারিতে ফেরত পাবেন গ্রাহক

আমাদেরকণ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ০৭:১৪
ফাইল ছবি

মহামারি করোনাভাইরাস বাড়বাড়ন্ত সময়ে ঘরে বসে পণ্য পেতে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছিল দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সবচেয়ে সমালোচিত খাতে পরিণত হয় এই খাত। প্রতারণার ফাঁদ পাতা ইভ্যালি সরকারের বেড়াজালে আটকে পড়ার পর উন্মোচন হয় কিউকম, ধামাকা, ই-অরেঞ্জসহ আরও কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মুখোশ। গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আটকে যায় পেমেন্ট গেটওয়েতে।

তবে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মধ্যে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা ২১৪ কোটি টাকা ফেরতের উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে মামলার বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠানের গেটওয়েতে আটকা টাকা জানুয়ারি থেকে ফেরত পাবে গ্রাহক।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল কমার্স সেলকে আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অনুবিভাগের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই উইং নিবিড়ভাবে এটি নিয়ে কাজ করছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সাতটি বিষয়ে তাদের কাছে মতামত চেয়েছিল এবং তিনটি মিটিং করে গত ১১ নভেম্বর সেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একটি টেকনিক্যাল কমিটি এটি নিয়ে কাজ করেছে। গত সপ্তাহে এটি নিয়ে একটি বৈঠকও হয়েছে। কীভাবে গ্রাহকের টাকা দেওয়া হবে সেটি নিয়ে কাজ করছে ডিজিটাল কমার্স সেল। ২১৪ কোটি টাকার বাইরে আরও যেসব টাকা আটকে আছে সেগুলো গ্রাহকের কাছে ফিরিয়ে দিতে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।

অনলাইনেই টাকা ফেরত পাবেন গ্রাহক

ই-কমার্সে গ্রাহক ভোগান্তির অভিযোগের মুখে চালু এসক্রো সিস্টেমে আটকা পড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর টাকা ফেরত শুরু হলে যে প্রক্রিয়ায় গ্রাহক টাকা দিয়েছেন সেই প্রক্রিয়ায় টাকা ফেরত পাবেন। এর আগে ইভ্যালিসহ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের দেওয়া চেক বাউন্স করায় অনেক গ্রাহকেরই এটি নিয়ে সংশয় রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের কর্মকর্তারা জানান, যেহেতু গ্রাহক অনলাইনে পেমেন্ট করেছে আমরা টাকা রিলিজ শুরু করলে অনলাইনেই তাদের টাকা ফেরত দেবো।

কিউকমের আটকা ৩৯০ কোটি টাকা ফেরতের উদ্যোগ

ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ডটকমের লেনদেনের ৩৯০ কোটি টাকা আটকে আছে পেমেন্ট গেটওয়ে ফোস্টারের কাছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক চিঠিতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ফোস্টার পেমেন্টস নামে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানে তাদের গ্রাহকদের একটি বড় অঙ্কের টাকা আটকে থাকার কথা জানায়।

ফোস্টার পেমেন্টস মূলত এসএসডি টেক নামে একটি কোম্পানির পেমেন্ট সার্ভিস উইং। বাংলাদেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়া, মিয়ানমার ও সিঙ্গাপুরেও তারা রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, কিউকমে যারা প্রোডাক্ট অর্ডার করেছে তাদের টাকা জমা হতো ফস্টারের কাছে। তারা সেই টাকা হ্যান্ডওভার করতো। গত ৩০ জুন এসক্রো সার্ভিস চালু হয়েছে, কিন্তু এর আগে থেকেই ফস্টারে কিউকমের টাকাটি আটকে আছে। এটা নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠকে ফস্টারকে ডাকা হয়। ফস্টারের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগও রয়েছে। এ কারণে তাদের সঙ্গে বসে কোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে কীভাবে টাকা ফেরত দেওয়া যায় সেটি চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে ৩৯০ কোটি টাকা আটকা আছে।

সার্বিক বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, গত চার-পাঁচ মাস আগে যে একটা ডিজেস্টার হলো, আমাদের বড় বড় অপারেটররা তাদের অনৈতিক কারণে মামলা মোকদ্দমার মুখে পড়েছেন। ভোক্তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায় কীভাবে সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। তবে যেগুলোর মামলা মোকদ্দমা আছে সেগুলোর টাকা ফেরত দেওয়া কোর্টের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘সিআইডি ও বাংলাদেশ ব্যাংক এটি নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানোর পর গত ১৫ ডিসেম্বর টাকা ফেরত দিতে একটি সার্কুলার জারি করেছে। কিন্তু যাদের চিঠিটা দেওয়া হয়েছে তারা জানে না, কোনটায় মামলা আছে কোনটায় মামলা নেই। সেজন্য গত সপ্তাহে একটি মিটিং করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে একটি চিঠি দিয়েছি যে কাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে সেই তালিকা দিতে। কারণ এখানে বেশকিছু সংস্থা কাজ করছে। সেক্ষেত্রে আমরা কম্বাইন্ড একটা রিপোর্ট চেয়েছি যে কাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে সেগুলো পেলে মামলার বাইরের টাকাগুলো আমরা ফেরত দিতে পারবো।’

কবে নাগাদ গ্রাহকরা টাকা পেতে শুরু করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২১৪ কোটি টাকার মধ্যে যেগুলো মামলার বাইরে আছে সেটা খুব সহসাই পাবে। সহসা বলতে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আমরা এই টাকা রিলিজ করতে পারবো।

ই-কমার্সকে যেভাবে এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা

বছরজুড়ে নানান সমালোচনার মুখে থাকা কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা অনেক গ্রাহক। এমন পরিস্থিতিতে ই-কমার্সকে কীভাবে সামনে এগিয়ে নেওয়া যায় সেটি নিয়ে পরিকল্পনা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যাতে এ খাত সমৃদ্ধ হতে পারে সেদিকে নজর রাখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ই-কমার্সের ব্যবসার জন্য সবাইকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসতে হবে, সেটার কাজ শেষ দিকে। আমরা টেকনিক্যালি এটার টেস্ট রান করছি। সেখানে আমাদের সাইবার সিকিউরিটির ইস্যু আছে। সেটাকে কীভাবে আমরা প্রোটেক্ট করতে পারি তা নিয়ে এটুআই কাজ করছে। শিগগির আমরা এটি উদ্বোধন করবো। শুরুতে আমাদের কাছে প্রচুর আবেদন পড়বে, সেজন্য কোম্পানিগুলো রেজিস্ট্রেশনের কাজ করা আরজেএসসির হাতে ই-কমার্স রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটা হয়তো দেবো। কিন্তু ওভারঅল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডিজিটাল কমার্স সেল এটা মনিটরিং করবে।

চলতি বছরের জুলাই মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সরবরাহকারী কোম্পানি ও গ্রাহকদের কাছে ৫০০ কোটি টাকার দায়ে পড়েছে ইভ্যালি। ইভ্যালির পথ অনুসরণ করে ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, কিউকম, সিরাজগঞ্জ শপ, আনন্দের বাজার, এসপিসি ওয়ার্ল্ড, নিরাপদ ডটকমসহ অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ও ই-কমার্সকে একটি নিয়মের মধ্যে আনতে উদ্যোগ নেয় সরকার।

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জিয়াউল হক
চেয়ারম্যান: মিসেস নাজমা হক
ঠিকানা: শাঁহ আলী টাওয়ার (৩য় তলা)
৩৩, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ ।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি ।
©২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । আমাদেরকণ্ঠ২৪ ডট কম, জিয়া গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান ।
কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নাম্বার CRW-24516