Amader Kantho- Bangla Online News Portal and Bangladeshi online news source for Game, Binodon, politics, national, international, lifestyle, sports, and many more factors.

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ, ২০২৪

Facebook Facebook Facebook Facebook

খাদ্য মূল্যস্ফীতির বড় ঝুঁকিতে সব দেশ

আমাদেরকণ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৮:২৩
ফাইল ছবি

বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ কারণে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের প্রায় সব দেশই খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। স্বল্প, মধ্য ও উচ্চ আয়ের সব দেশেই খাদ্য মূল্যস্ফীতির আঘাত আসতে পারে। এর মধ্যে ৪৫টি দেশের ২০ কোটি ৫১ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগবে এবং ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে তাদের অবস্থা আরও খারাপ হবে। সোমালিয়ার উপকূলবর্তী তিনটি অঞ্চলে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রবল খাদ্য সংকটের কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ব্যবস্থাপনার এ ভয়ানক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দেশ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সে তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, করোনার সময়ে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন কম হওয়া ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যোৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কৃষি উপকরণের সংকটের কারণে খাদ্য উৎপাদন কমেছে। একই সঙ্গে সারসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় খাদ্যের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে সার্বিকভাবে খাদ্য উপকরণের দাম বেড়েছে।  এতে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে।

ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ। তারা গম, ভাঙা চাল ও চিনি রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। পরে শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশে কিছু গম রপ্তানি করেছে। গম ও আটা জাতীয় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নিবন্ধন প্রথা আরোপ করেছে। আগে এটি ছিল না। ধান, বাদামি এবং সাদা চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এ কারণে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোসহ আফ্রিকার দেশগুলোতে খাদ্য রপ্তানি কমে যেতে পারে। কেননা ভারত ওইসব দেশে প্রচুর খাদ্য রপ্তানি করত। আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে তারা গম রপ্তানি বন্ধ করেছে। আলিজেরিয়া চিনি, গম, তেল রপ্তানি বন্ধ করেছে। আর্জেন্টিনা সয়াবিন তেল রপ্তানির ওপর কর আরোপ করেছে। বাংলাদেশ চাল রপ্তানি বন্ধ করেছে। ঘানা ভুট্টা, চাল ও সয়াবিন রপ্তানি বন্ধ করেছে। ইরান আলু, ডিম, পেঁয়াজ, টমেটো রপ্তানি বন্ধ করেছে। কাজাকিস্তান থেকে সানফ্লাওয়ার বীজ, চিনি রপ্তানি বন্ধ। কুয়েত ভেজিটেবল অয়েল, মুরগির মাংস, পাকিস্তান চিনি, রাশিয়া সরিসার বীজ, সয়াবিন, গম, কর্ন, সানফ্লাওয়ার বীজ, সানফ্লাওয়ার তেল রপ্তানি বন্ধ করেছে। তিউনেশিয়া ফল ও সবজি, তুরস্ক রান্নার তেল, গরুর মাংস, খাসির মাংস, বাটার রপ্তানি বন্ধ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্যের মূল্য ৮ শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে রপ্তানি মূল্য সূচক কমেছে ২ শতাংশ। জুলাইয়ে খাদ্যশস্যের দাম কিছুটা কমার পর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে গম এবং ভুট্টার দাম বেড়েছে। তবে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। গত এক মাসের ব্যবধানে ভুট্টার দাম ১২ শতাংশ এবং গমের দাম ৭ শতাংশ বেড়েছে। চালের দাম বেড়েছে দশমিক ৩ শতাংশ। ২০২১ সালের তুলনায় এখন পর্যন্ত ভুট্টার ১৭ শতাংশ, গমের ২৯ শতাংশ এবং চালের দাম ৬ শতাংশ বেড়েছে।

খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার প্রায় সব দেশে বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলো। এর মধ্যে লেবাননে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ৭২ শতাংশ, জিম্বাবুয়েতে ৬৮ শতাংশ, শ্রীলংকায় ৩০ শতাংশ, ইরানে ২৯ শতাংশ, হাঙ্গেরিতে ১৮ শতাংশ খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এছাড়া কলম্বিয়া, জিবুতি ও রুয়ান্ডায় ১৪ শতাংশ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে। বুরকিনা ফাসোতে ১৩ শতাংশ, কোস্টারিকায় ১০ শতাংশ, বুরুন্ডিতে ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ, ইথিওপিয়ায় ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ, গাম্বিয়ায় ১৪ শতাংশ, মালাউইতে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ, মোজাম্বিকে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ, সোমালিয়ায় ১৭ শতাংশ, উগান্ডায় সাড়ে ১৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় সাড়ে ৭ শতাংশ, বাংলাদেশে ৮ দশমিক ২ শতাংশ, কেনিয়ায় সাড়ে ১৫ শতাংশ খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমালিয়া উপকূলের তিনটি অঞ্চলের দেশগুলোতে জুন ও জুলাইয়ে চালানো জরিপে দেখা গেছে, এসব এলাকায় অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সংকট প্রকট হতে পারে। এতে ওই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এ কারণে ইতোমধ্যেই ওই অঞ্চলে খাদ্যের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই অঞ্চলে খাদ্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি সরবরাহেও ঘাটতি দেখা গেছে। একই সঙ্গে তীব্র খরার কারণে ওইসব দেশে খাদ্য উৎপাদন যেমন কম হয়েছে, তেমনি স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থারও অবনতি হয়েছে। ভয়ানক খরা, জাতিগত সংঘাত এবং খাদ্যের উচ্চমূল্য গবাদিপশু পালন ও ফসল ফলানোর ক্ষমতাকে সীমিত করেছে। গভীরভাবে প্রভাবিত করছে প্রধানত কৃষিজীবী মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত খাবারের জোগান নিশ্চিত করা। এমন পরিস্থিতি ২০২৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের ২৫ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটের কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। এতে অপুষ্টি জটিলতা, অনাহার ও মৃত্যুর আশঙ্কা করা হয়েছে। যেসব এলাকায় দুর্ভিক্ষ হবে ওইসব এলাকার কমপক্ষে ২০ শতাংশ পরিবার চরম খাদ্য সংকটে ভুগবে। ৩০ শতাংশ শিশু অপুষ্টির শিকার হবে। প্রতি ১০ হাজারে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ও চারজন শিশু প্রতিদিন অনাহারে ও অপুষ্টির শিকার হবে। যেসব দেশ খাদ্য সংকটে পড়তে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, মোজাম্বিক, সুদান, ইথিওপিয়া, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়েসহ আরও কিছু দেশ।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলো রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন অবরোধ আরোপ করলে রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ইউরোপের বড় শিল্পগুলোর গ্যাসের জোগান আসত রাশিয়া থেকে। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে সারসহ কৃষি উপকরণের উৎপাদন কমে যায়। এতে বিশ্বব্যাপী সার সংকটের কারণে এর দাম বেড়ে যায়। যা কৃষি উৎপাদনের ব্যয়কে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতেও কৃষি উৎপাদন কমতে পারে।

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জিয়াউল হক
চেয়ারম্যান: মিসেস নাজমা হক
ঠিকানা: শাঁহ আলী টাওয়ার (৩য় তলা)
৩৩, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ ।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি ।
©২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । আমাদেরকণ্ঠ২৪ ডট কম, জিয়া গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান ।
কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নাম্বার CRW-24516