Amader Kantho- Bangla Online News Portal and Bangladeshi online news source for Game, Binodon, politics, national, international, lifestyle, sports, and many more factors.

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

Facebook Facebook Facebook Facebook

বাজারে ছাপানো টাকা ছাড়ের রেকর্ড

আমাদের কণ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৪ ফেরুয়ারী, ২০২৩, ০৩:২৬
ছাপানো টাকা ছা

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাজারে মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। এতে নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে। এই চাহিদা মেটাতে বাজারে ছাড়া হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ ছাপানো টাকা। বিভিন্ন সম্পদের বিপরীতে ও প্রণোদনার আওতায় এসব টাকা ছেড়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারের মাত্রাতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার কারণেও বাজারে নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে নোট ছাড়ার প্রবণতা বেড়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার চাপে রয়েছে। গত বছরের জুলাই-নভেম্বরে বাজারে নগদ ছাড়া হয়েছে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ছাড়া হয়েছিল ১২৯ কোটি টাকা। করোনার সময়ে সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার কোটি টাকা বাজারে ছাড়া হয়।

গত নভেম্বর পর্যন্ত সরবরাহ করা মোট মুদ্রা ১৭ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ছাপানো নোট আকারে বাজারে আছে ২ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। যা মোট ইস্যু করা মুদ্রার ১৫.৮০ শতাংশ। যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ২ থেকে ৩ শতাংশ বেশি। বাকি ১৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ছাপানো নোট আকারে বাজারে নেই। এগুলো আছে ইলেকট্রনিক বা প্লাস্টিক মানি আকারে। যেগুলো বিভিন্ন ধরনের কার্ড, অনলাইন বা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হচ্ছে।

২০২২ সালের জুলাই-নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাপানো নোট বাজারে এসেছে ১৮ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে এসেছিল ১২৯ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ছাপানো নোটের প্রবাহ ১৪৩ গুণ বেড়েছে। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে তা বেড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ২০২১ সালের একই সময়ে বেড়েছিল ৫৬০০ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে বেড়েছে সাড়ে ৩ গুণ। ২০২০ সালের একই সময়ে বাজারে ছাপানো টাকা ছাড়ার পরিবর্তে ৫০২৪ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়।

চলতি অর্থবছরে জিডিপি আকার ৪৪ লাখ কোটি টাকা। মোট জিডিপির মধ্যে বাজারে নোট আকারে ছাড়া হয়েছে ৭ শতাংশ। উন্নত দেশগুলোতে বা ক্যাশবিহীন লেনদেন বেশি এমন দেশে জিডিপির ৩ থেকে ৪ শতাংশ নোট আকারে ছাড়া হয়। অনুন্নত দেশগুলোতে বা ক্যাশ লেনদেন বেশি এমন দেশে নগদ টাকার প্রবাহ বেশি হয়। যেমনটি হয়েছে বাংলাদেশে। ভারতে জিডিপির অনুপাতে নোটের প্রবাহ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। কেননা ভারতে ক্যাশ লেনদেন বেশি। ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে নগদ লেনদেন কম বলে ছাপানো নোটও কম। ওইসব দেশে কার্ডে লেনদেন বেশি হচ্ছে।

২০২২ সালের জুনে ১৭ লাখ ০৮ হাজার কোটি মুদ্রা সরবরাহের মধ্যে ছাপানো নোট আকারে বাজারে ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট মুদ্রার ১৫ শতাংশ। ২০২১ সালের জুনের তুলনায় ছাপানো টাকা বেড়েছিল ২৯ হাজার কোটি টাকা বা ১২.৭৮ শতাংশ। ২০২১ সালের জুনে ১৫ লাখ ৬১ হাজার কোটি মুদ্রার মধ্যে নোট আকারে ছিল ২ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। যা মোট মুদ্রার ১৪.৫৪ শতাংশ। ২০২০ সালের জুনের তুলনায় বেড়েছিল ১৯ হাজার কোটি টাকা বা ৯.১৩ শতাংশ। ২০২০ সালের জুনে মুদ্রার সরবরাহ ছিল ১৩ লাখ ৭৪ হাজার কোটি, এর মধ্যে ছাপানো নোট ছিল ২ লাখ ০৮ হাজার কোটি টাকা। যা মোট মুদ্রার ১৫.১৪ শতাংশ। ২০১৯ সালের জুনের তুলনায় বেড়েছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকা বা ২২.৩৫ শতাংশ।

২০১৯ সালের জুনে সরবরাহ করা মোট মুদ্রা ছিল ১২ লাখ ২০ হাজার কোটি, এর মধ্যে নগদ ছিল ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। যা মোট মুদ্রার ১৩.৯৩ শতাংশ। ২০১৮ সালের তুলনায় নগদ মুদ্রার সরবরাহ বেড়েছিল ১৫ হাজার কোটি টাকা বা ৯.৬৭ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, টাকা ছাপানো ধারাবাহিক কাজ। টাকা ছেপে ভল্টে মজুত রাখা হয়। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে ছাড়া হয়। এর মধ্যে বেশির ভাগই বৈদেশিক মুদ্রা ও অপ্রচলনযোগ্য নোটের বিপরীতে ছাড়া হয়। সম্পদ ছাড়া নোট বাজারে দেওয়া হয় না। বেশি মাত্রায় টাকা ছাড়লে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। এটি বিবেচনায় নিয়ে যেমন টাকা ছাড়া হয়, তেমনি তুলেও নেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। তারাই টাকা ছাপানোর নিয়ন্ত্রক। টাকা ছাপানোর পর সেগুলো টাঁকশালের মহানিরাপত্তা এলাকায় জমা থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী তাদের শাখাগুলোতে দেওয়া হয়। কেন টাকা ছাপানো হয় : নানা কারণে টাকা ছাপানো হয়। অর্থনৈতিক সংকটের সময়, কোনো দুর্যোগ বা আস্থাহীনতা দেখা দিলে, সরকারের রাজস্ব কমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিলে, অর্থনীতির আকার বড় হলে, রেমিট্যান্স বা ডলারের প্রবাহ বাড়লে, অপ্রচলনযোগ্য নোট তুলে ঘাটতি মেটাতে টাকা ছাপতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছে করলেই টাকা ছাপাতে পারে না। এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হয়। বিভিন্ন সম্পদের বিপরীতে টাকা ছাপতে হয়।

দেশে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে বাজারে টাকা ছাড়া হয়। এর মাধ্যমে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হয়। যেমনটি করা হয়েছে করোনার সময়। ওই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন প্রণোদনার আওতায় ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা জোগানের প্রতিশ্রুতি দেয়। এর মাধ্যমে মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজারে দেয়। পুরো টাকা নগদ দেয়নি। ওই সময়েই সবচেয়ে বেশি ছাপানো টাকা বাজারে আসে।

সরকার বিভিন্ন কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। এই টাকা সরকারকে ইলেকট্রনিক বা ক্যাশবিহীন আকারে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন বন্ড বন্ধক রাখে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৬৫ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। যা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় রেকর্ড। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণে বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়ে। তখন বাড়ে নগদ লেনদেনের চাহিদাও। এর বিপরীতেও টাকা ছাপানো হয়।

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জিয়াউল হক
চেয়ারম্যান: মিসেস নাজমা হক
ঠিকানা: শাঁহ আলী টাওয়ার (৩য় তলা)
৩৩, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ ।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি ।
©২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । আমাদেরকণ্ঠ২৪ ডট কম, জিয়া গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান ।
কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নাম্বার CRW-24516