Amader Kantho- Bangla Online News Portal and Bangladeshi online news source for Game, Binodon, politics, national, international, lifestyle, sports, and many more factors.

ঢাকা, শনিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪

Facebook Facebook Facebook Facebook

আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার ১০ উপায়

ধর্ম ডেস্ক:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ০৪ আগষ্ট, ২০২৩, ০১:১৬
আল্লাহর প্রিয় বান্দা

যে গুণ মানুষকে সম্মানিত করে, যে স্বভাব আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে সহায়তা করে, যে অভ্যাসগুলো মানুষের ব্যক্তিত্বকে গঠন করে, যে বৈশিষ্ট্যের কারণে মানুষ গুনাহমুক্ত জীবন গড়তে পারে, যেসব বৈশিষ্ট্যের কারণে ঈমানের হাওয়ায় উড়তে পারে—তা নিয়ে নিচের আয়োজন।

আল্লাহকে ভালোবাসা

অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্ব এনেছেন, প্রতিকূল ও অনুকূল পরিস্থিতিতে তিনি আমাকে লালন-পালন করেন, প্রতিনিয়ত যাঁর হাজারো নিয়ামত আমি ভোগ করি—তিনি আমার রব, তিনি আমার আল্লাহ। তাঁর বিধি-বিধান মানা ও তাঁর হুকুমমতো জীবন পরিচালনা করার মাঝেই সবার কল্যাণ। মুমিন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা তার আনুগত্য ও অনুসরণের পথকে সুগম করে দেয়।

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে। (হে নবী, মানুষকে) বলে দাও, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবেসে থাকো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
তাওবা করা মানুষ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ করে।

দৃঢ়সংকল্প থাকা সত্ত্বেও শয়তান অনেক সময় আমাদের ধোঁকা দিয়ে থাকে। কিন্তু বান্দা যখন তার ভুল বুঝতে পারে, তার ভেতর অনুশোচনা ও অনুতপ্ত জাগ্রত হয়, এক আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, তখন আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত খুশি হন। এবং আল্লাহ তাআলা বান্দার এই তাওবাকে কবুল করেন। আল্লাহ তাআলা বান্দার তাওবার মাধ্যমে তার যাবতীয় পাপ মোচন করে দেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো খাঁটি তাওবা, আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত। নবী ও তাঁর সঙ্গে যারা ঈমান এনেছে তাদের সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৮)

বিপদে ধৈর্য ধারণ করা

দুনিয়াতে আল্লাহ তায়ালা মাঝেমধ্যে বান্দাকে ছোট-বড় বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। প্রকৃত মুমিন এসব বিপদাপদে ধৈর্য ধারণ করে। কারণ আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীল বান্দাদের ভালোবাসেন।কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের প্রশংসা করেছেন। এ জন্য যেকোনো বিপদাপদে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে পূর্ণ ধৈর্য ধারণ করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবে না, করলে তোমরা সাহস হারাবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হবে। আর ধৈর্য ধারণ করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৪৬)

আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকা

মনের বিরুদ্ধে কোনো কিছু হলেই অনেক সময় আমরা আজেবাজে মন্তব্য করে বসি। যা আমাদের পরবর্তী সময়ে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেকোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর সিদ্ধান্তের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো বান্দা মুমিন হতে পারবে না যে পর্যন্ত না সে তাকদির ও তার ভালো-মন্দের ওপর ঈমান আনবে। এমনকি তার নিশ্চিত বিশ্বাস থাকতে হবে যে যা কিছু ঘটেছে তা কিছুতেই অঘটিত থাকত না এবং যা কিছু ঘটেনি তা কখনো তাকে স্পর্শ করবে না।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২১৪৪)

আল্লাহর নিয়ামতে কৃতজ্ঞ থাকা

কৃতজ্ঞতা আল্লাহর এক শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। কৃতজ্ঞতাবোধ জীবনের সফলতার চাবিকাঠি। আল্লাহ তাআলা যাদের এই নিয়ামত দিয়েছেন তাদের অনেক কিছু দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, সুহায়েব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। সব কাজই তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া অন্য কেউ এ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না। তারা সুখ-শান্তি লাভ করলে কৃতজ্ঞতা আদায় করে। আর অসচ্ছলতা বা বিপদাপদে আক্রান্ত হলে ধৈর্য ধারণ করে। প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৩৯০)

আশা ও ভয়ের মাঝে ভারসাম্য থাকা

মুমিন সব সময় আশা ও ভয়ের মাঝামাঝি থাকবে। অত্যধিক ভীতসন্ত্রস্ত হওয়া কিংবা অধিক আশাবাদী হওয়া কোনোটাই কাম্য নয়। বরং এ দুইয়ের মাঝে ভারসাম্য থাকবে। কোরআনে আল্লাহ তাআলা যেভাবে ভয়ের কথা আলোচনা করেছেন, তেমনিভাবে আশার বাণীও শুনিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে কী পরিমাণ শাস্তি আছে, ঈমানদাররা যদি তা জানত তাহলে কেউ তাঁর কাছে জান্নাতের প্রত্যাশা করত না। এমনিভাবে আল্লাহর কাছে যে পরিমাণ দয়া আছে, অবিশ্বাসীরা যদি তা জানত তাহলে কেউ তার জান্নাত থেকে নিরাশ হতো না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৮৭২)

দুনিয়াবিমুখ থাকা

দুনিয়াবিমুখতা মানুষকে সম্মানিত করে। কারো প্রতি মুখাপেক্ষী না হওয়া মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্মাণ করে। হাদিসে এসেছে, ‘মুমিনের সম্মান তাহাজ্জুদ পড়ার মাঝে এবং তার মর্যাদা মানুষ থেকে অমুখাপেক্ষিতার মাঝে।’ (তাবারানি, হাদিস : ৪২৭৮)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন, যা আমি করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবে এবং লোকেরাও আমাকে ভালোবাসবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি অবলম্বন কোরো। তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন। মানুষের কাছে যা আছে, তুমি তার প্রতি অনাসক্ত হয়ে যাও, তাহলে তারাও তোমাকে ভালোবাসবে।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব, হাদিস : ৩২১৩)

প্রতিটি আমলে ইখলাস থাকা

যেকোনো আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার মাপকাঠি ইখলাস। ইখলাসবিহীন কোনো আমলই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।  আল্লাহর আনুগত্যশীল বান্দার প্রথম কর্তব্য তার নিয়তকে পরিশুদ্ধ করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কাজ (এর প্রাপ্য) নিয়ত অনুযায়ী হবে। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোনো মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে—তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্য সে হিজরত করেছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১)

বিনয়ী হওয়া

বিনয় এমন একটি গুণ, যা মানুষের ভালোবাসা টেনে আনতে সক্ষম। বিনয়ী ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তাআলা মানুষের দিলে ভালোবাসা ঢেলে দেন। কারণ বিনয়ের মূল্য আল্লাহর কাছে অনেক বেশি। আলা ইবনে আবদুর রহমান (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর পথে সদকা করলে সম্পদ কমে না। ক্ষমা দ্বারা সম্মান বৃদ্ধি হয় এবং নম্রতা প্রদর্শনকারীর মর্যাদা আল্লাহ তাআলা বাড়িয়ে দেন। (মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদিস : ১৮২৬)

সৃষ্টিজীবের প্রতি সদাচরণ করা

সদাচরণ ইসলামের মৌলিক সৌন্দর্য ও অনুপম আদর্শ। যারা উত্তম চরিত্রের অধিকারী তারা সব সৃষ্টিজীবের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করে। উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে মানুষের ভেতরের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। মানুষের প্রতি দয়া, সুন্দর আচরণ, ভালো ব্যবহার, মানুষকে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করে। আবু জর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘তুমি যেখানেই থাকো, আল্লাহ তাআলাকে ভয় কোরো, মন্দ কাজের পরপরই ভালো কাজ কোরো, তাতে মন্দ দূরীভূত হয়ে যাবে এবং মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ কোরো।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৭)

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জিয়াউল হক
চেয়ারম্যান: মিসেস নাজমা হক
ঠিকানা: শাঁহ আলী টাওয়ার (৩য় তলা)
৩৩, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ ।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি ।
©২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । আমাদেরকণ্ঠ২৪ ডট কম, জিয়া গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান ।
কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নাম্বার CRW-24516