Amader Kantho- Bangla Online News Portal and Bangladeshi online news source for Game, Binodon, politics, national, international, lifestyle, sports, and many more factors.

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Facebook Facebook Facebook Facebook

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ “জলচৌকি সেলুন”

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০২:৪৬
জলচৌকি সেলুন

গাজীপুর প্রতিনিধি;"নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্য ভালোবাসেন। "আমরা সবাই সুন্দর হতে চাই। মানুষ মাত্রই সুন্দরের পূজারী। জগতের সবত্রই সুন্দরের পরম লীলা চলছে।এই সুন্দর থেকেই সৌন্দর্য, সৌন্দর্যতত্ব,সৌন্দর্য ভাবনা প্রভৃতি যাত্রা শুরু।

মানুষ সুন্দর হওয়ার জন্যে কত কিছুই না করে থাকে। মানব সভ্যবতার প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ নিজেকে অন্যের কাছে নিজেকে  সুন্দররূপে উপস্থাপন করতে ব্যস্ত। আর তাই  আধুনিকতার ছোয়ায় বিউটি পর্লারগুলোতে নারী-পুরুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। মানুষকে দেখতে সুন্দর করা যাদের কাজ তাদের কে সাধারণ বলা হয় বিউটিশিয়ান।তাদের মধ্যে ছেলেদের চুল সুন্দর কাজ করে তাদের বলে নরসুন্দর।  আমরা যাকে আঞ্চিলক ভাষায় বলে থাকি নাপিত। মানুষের সৌন্দয্যের অন্যতম উপকরণ হলো মাথার চুল। এই চুল নিয়ে যুগে যুগে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। সেই কারণে কেশ বিন্যাসের কারিগরদের অর্থাৎ নাপিতদের কদর ও প্রয়োজনীয়তা আজও ফুরিয়ে যায়নি।আধুনিক ছোয়ায় আসছে বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার।কেশ(চুল) কর্তন বা সুন্দর্য্যবর্ধন কার্যক্রম সম্পাদন করার পর আমরা অনেকেই এই নরসুন্দরদের খবর রাখি না। রাখার প্রয়োজনও অনুভব করি না।তাদের জীবন যাত্রা মান কিভাবে চলে।তাদের পরিবারের ই বা চলে কিভাবে।মানব সভ্যতার অপরিহার্য অংশ হল নরসুন্দর (নাপিত)।আধুনিক সভ্যতার ক্রমবির্বতনের  চাহিদার ফলে আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গতি ধারায় এসেছে পরিবর্তন, লেগেছে নতুনত্বের প্রযুক্তির  আধুনিকতার ছোঁয়া। তাই আজ হাট-বাজারের বট বৃক্ষের ছায়ায়, খেয়াঘাটে, পাড়াই পাড়াই গুরে,অস্থায়ী দোকানে,ফুটপাতে কিংবা গ্রামগঞ্জের জলচৌকিতে বা ইটের ওপর সাজানো পিঁড়িতে বসে নাপিতের পায়ের দুই  হাঁটুর মাঝখানে মাথা পেতে দিয়ে আবহমান গ্রামবাংলা মানুষের চুল-দাড়ি কাটার সেই বাপ-দাদার  আদি পরিচিত দৃশ্য এখন আর সচারাচর চোখে পড়ে না বলেই চলে।সাপ্তাহিক বাজারের দিন হলেই বাপ-দাদার হাত ধরে ছুটে যেতাম মাথার চুল কাটাতে। ঘন্টার পর ঘন্টার সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হত জলচৌকি উপর।আর বসে শুনতাম কেঁচির ঘেচাং ঘেচাং শব্দের আওয়াজ। এর মধ্যে বাপ-দাদা নিত্য দিনে  সাপ্তাহিক হাটবাজার শেষ করত আবার কখনো হত না। তবে এখনও শ্রীপুর উপজেলার কিছু হাট-বাজারে কদাচিৎ চোখে পড়ে সেই দৃশ্য। শ্রীপুর উপজেলা পৌর সভার মাওনাবাজারে জমির আলী দীর্ঘ দিন ধরে এ কাজ করে যাচ্ছেন।শুধু বাজারের না  মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জলচৌকিতে বসিয়ে সেই কাঠের বক্স যার মধ্যে ক্ষুর, কাঁচি, চিরুনি, সাবান, ফিটকারি, পাউডার ও লোশন নিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে সুন্দর করার কাজ করে যাচ্ছেন। বয়স ৬৫ এর কাছাকাছি।

দীর্ঘ ৪২ বছর যাবৎ তিনি এ পেশায় আছেন। তিনি বলেন, তখন চুল কেটে মানুষ দিত ৫ টাকা আর দাঁড়ি কেটে ২ টাকা। সে সময়ে শীলদের (নাপিত) যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার ভাল ভাবেই চলে যেতো। কিন্তু বর্তমানে ৩০ টাকার চুল ও ২০ টাকায় দাঁড়ি কেটেও সারাদিনে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ করতে হিমসিম খেতে হয়। জমির আলী আরো বলেন, পূর্বে আমরা বার্ষিক চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করতাম। কিন্তু বর্তমানে সেই নিয়ম নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমানে যে পরিবর্তন এসেছে চুল-দাড়ি কাটার সরঞ্জাম,যন্ত্রপাতিও পরিবর্তন হয়েছে। সেসব সেলুনে এখন আর শান দেয়া ক্ষুর দেখাই যায় না। তার বদলে এসে গেছে বেলেড লাগানো ক্ষুর। এসেছে সেভিং ক্রিম, লোশন, ফোমসেভিং, চুলের কলপ।এসেছে রিচার্জবল ব্যাটারী ব্যবহৃত কেঁচি। তিনি যখন এ কাজ শুরু করেন তখন তাদের কাছে এগুলো ছিল কল্পনার অতীত।

মাওনা চৌরাস্তার পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে আধুনিক ডেকোরেশন করা সেলুনের শীল (নাপিত) আলাল সরকার বলেন, এখন আর মানুষ পিঁড়িতে বসে চুল কাটতে চায়না। লুকিং গ্লাসের সামনে আরাম কেদারা(চেয়ার)বসেই মানুষজন চুল কাটতে পছন্দ করেন বেশি।


নইমুল ইসলাম সজিব/শ্রীপুর গাজীপুর

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জিয়াউল হক
চেয়ারম্যান: মিসেস নাজমা হক
ঠিকানা: শাঁহ আলী টাওয়ার (৩য় তলা)
৩৩, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ ।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি ।
©২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । আমাদেরকণ্ঠ২৪ ডট কম, জিয়া গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান ।
কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নাম্বার CRW-24516